Friday, May 30, 2014

জীবনবৃত্তান্তে কীভাবে দেবেন শিক্ষা-তথ্য

স্কট থম্পসনের কথা মনে আছে? জীবনবৃত্তান্তে শিক্ষা বিষয়ে ভুল তথ্য দেওয়ার কারণে ২০১২ সালে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়েছিল ইয়াহুর এই প্রধান নির্বাহীকে। চাকরিতে ঢোকার সময় নিজের রেজ্যুম বা কারিকুলাম ভিটায় (জীবনবৃত্তান্তে) থম্পসন লিখেছিলেন তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সের ডিগ্রি নিয়েছেন। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা যায়, তাঁর শিক্ষাজীবন শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ওই বিশ্ববিদ্যালয় এই বিষয়ে কোনো ডিগ্রি দেওয়া শুরুই করেনি। বিষয়টা ধরা পড়ায় চার মাসের মাথাতেই চাকরি ছেড়ে দিতে হয় থম্পসনকে।
আপনি শুরু করেছিলেন কিন্তু শেষ করতে পারেননি, এমন তথ্য জীবনবৃত্তান্তে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে সাবধান। তার মানে এই নয় যে, আপনি তা বাদ দিয়ে যাবেন; বরং শিক্ষাগত যোগ্যতার অংশে একটু সংক্ষিপ্ত বর্ণনাসহ সময় অনুক্রমে তা উল্লেখ করুন। কোর্সের নাম লিখুন, কোর্সের কতটা পর্যন্ত আপনি শেষ করেছেন তা উল্লেখসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করুন। মনোবিজ্ঞানী কার্ল পারসিংয়ের পরামর্শসহ এ বিষয়ে জানিয়েছে বিবিসি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সির মেট্রাস গ্রুপের শিল্প ও প্রতিষ্ঠানবিষয়ক মনোবিজ্ঞানী কার্ল পারসিং বলেন, ‘নিজেকে ভুলভাবে উপস্থাপন করার চেয়ে আপনি যে চাকরির জন্য আবেদন করেছেন, সেই পদের জন্য আপনার যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান কীভাবে কাজে লাগবে, সেটা যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে পারাই আপনাকে অনেকটা এগিয়ে দিতে পারে।’
এই মনোবিজ্ঞানী বলেন, চাকরির আবেদনে কিংবা জীবনবৃত্তান্তে স্বচ্ছতা বজায় রাখুন। শিক্ষা এবং দক্ষতায় আপনি কীভাবে কতটা অগ্রসর হয়েছেন, তার বর্ণনা তুলে ধরুন। একটা উদাহরণ দিয়ে পারসিং বলেন, প্রয়োজনে আপনি লিখতে পারেন—‘ক’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘খ’ কোর্স সম্পন্ন করেছি। ওই কোর্সে ‘গ, ঘ, ঙ’ বিষয়ে পড়েছি এবং তা আমাকে ‘জ’ এবং ‘ঝ’ বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করেছে। সঙ্গে যুক্ত করুন ছাত্রজীবন শেষে আপনি পেশাগত ক্ষেত্রে কোথায় কোথায় কী কাজ করেছেন সেই বর্ণনা। এভাবে প্রাসঙ্গিকভাবে শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা মিলিয়ে নির্দিষ্ট পেশাগত ক্ষেত্রে আপনার অর্জনকে উপস্থাপন করতে পারেন।
আপনি চাইলে ‘কভার লেটার’ বা চাকরির আবেদনপত্রটি কাজে লাগাতে পারেন আপনার জীবনবৃত্তান্তে উল্লেখ করা শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ব্যাখ্যা করার জন্য। আর এখানেই আপনি সংক্ষিপ্তভাবে জানিয়ে দিতে পারেন কেন একটা কোর্স শুরু করেও আপনি তা শেষ করেননি। আর শুধু কভার লেটারেই নয়, চাকরির সাক্ষাৎকারেও এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন। এ প্রসঙ্গে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে, এখানে খুব ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে বেশি কিছু লিখবেন বা বলবেন না। কেননা ভুলে গেলে চলবে না এটা চাকরির আবেদন, চাকরির সাক্ষাৎকার, মনোবিজ্ঞানীর কাছে ব্যক্তিগত কাউন্সেলিং সেশন নয়। বরং ব্যক্তিজীবনের সমস্যা কাটিয়ে আপনি কীভাবে উদ্যমের সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন, করছেন তা সামনে নিয়ে আসুন।
আপনি হয়তো একটা গবেষণার বৃত্তি নিয়ে ফেলোশিপ শুরু করেছেন কিন্তু তার ডিগ্রি অংশ শেষ করেননি। হয়তো একটা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছেন কিন্তু পরে ওই বিষয়ে আর অগ্রসর হননি। এমনকি হয়তো একটা বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েও সুযোগের অভাবে তাতে অংশ নিতে পারেননি। এগুলোর কোনোটিই ফেলনা নয় চাকরিদাতার কাছে। তবে, অবশ্যই সব বিষয়েরই প্রয়োজনীয় নথিপত্র বা সনদ জুড়ে দিতে হবে আপনার জীবনবৃত্তান্তের সঙ্গে।

No comments:

Post a Comment